রুমান হাফিজ। প্রতিভাবান এক কিশোরের নাম।মিষ্টি হাসি, মায়াবী চেহারা।দেখা মাত্রই প্রেমে পড়া ছাড়া উপায় নেই!
২০১৭সালে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা দিয়ে কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হয়েছে।এখন পড়ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এ।
রুমানকে না দেখে বুঝার উপায় নেই,কিভাবে এতসব ভালো লিখে।দেশের সবগুলো জাতীয় দৈনিক এর ছোটদের পাতায় ওর লেখা নিয়মিতভাবেই প্রকাশিত হচ্ছে।তাছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বের হওয়া স্থানীয় পত্র- পত্রিকা,মাসিক,দ্বিমাসিক,ত্রৈমা সিক ম্যাগাজিন,সাময়িকীতে ওর উপস্থিত চোখে পড়ার মতো।ইতোমধ্যে চমৎকার সব লেখাগুলো সবার নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছে।
কথা বলছিলাম ওর সাথে।শুরুটা কিভাবে ছিল, -এইতো ছোটবেলা থেকেই পত্রিকা,বই যাইহোক কাছে পেলেই পড়ে ফেলতাম,ক্লাস সেভেন এ থাকাবস্থায় প্রথম লেখালেখি শুরু,প্রথম লেখাটা স্থানীয় একটা পত্রিকায় এসেছিল।তারপর থেকে লেখালেখির আগ্রহটা বেড়ে যায়। মাঝেমধ্যে ছাপা হতো।
কাদের জন্য আর কি কি লিখা হয় এমনটা জানতে চাইলে ও জানায়,
-প্রথম থেকেই ছোটদের ম্যাগাজিন বেশি পড়া হতো,সেজন্য ছোটেদের নিয়েই লিখাটা বেশি হয়,অন্যগুলো যে হয় না তা নয়,তবে কম হয়।আর গল্প,ছড়া,প্রবন্ধ,ফিচার স্বভাবত এগুলোই লিখছি।
লেখালেখি করাটা ছোটদের জন্য খুব একটা সহজ না।বিশেষ করে আমাদের এই দেশের প্রেক্ষাপটে।তবে প্রবল ইচ্ছা শক্তি যেকোনো কাজকে এগিয়ে নিতে সহযোগিতা করবেই।
তেমনটাই জানায় রুমান, -সাপোর্ট যে একদম পাইনি তা নয়,তবে বাধা ছিলো বেশি।বিশেষ করে পড়ালেখার চাপে ইচ্ছে করলেও লিখা সম্ভব হয় নি অনেক সময়।
রুমান শিশুদের জন্য কেবল লিখেই থেমে থাকে না।সামাজিক ত্রুটিবিচ্যুতি নিয়ে তার কলম সদা জাগ্রত।কয়েকটা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাথে থেকে গরীব অসহায় মানুষদের,বিশেষ করে শিশুদের জন্য নানারকম সাহায্য সহযোগিতা করে আসছে।তাছাড়া "রেলগাড়ি" নামে ওর গড়ে তোলা একটা বইপড়ুয়া,সামাজিক সংগঠনও রয়েছে।চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও আরো কয়েকটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এর কার্যক্রম চলছে।
যেমনটা বলছিল রুমান,
-অসহায় মানুষদের জন্য কিছু করতে পারলে তো ভালো লাগে,সামর্থ্য অনুযায়ী চেষ্টা করি যতটুকু পারা যায়।সেই জায়গা থেকে "রেলগাড়ি" সংগঠন গড়া।খুব বেশি কিছু না করতে পারলেও অন্ততপক্ষে কিছু তো করতে পারবো।হয়তোবা সেই কিছু কিছু করা কাজ একসময় অনেককিছুতে রূপ নিতেও পারে!
শিশু অধিকার আদায়েও কাজ করছে রুমান।
'ইউনিসেফ' পরিচালিত দেশের প্রথম শিশু সাংবাদিক সাইট বিডিনিউজ২৪.কম এর "হ্যালো" বিভাগ এর সাথেও সে সম্পৃক্ত থেকে কাজ করেছে।
ভরাট কন্ঠের অধিকারী রুমান দারুণ আবৃত্তিতে কম যায় না।এক্ষেত্রে তার অর্জনটাও কম নয়।আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় একবার জেলা এবং দুইবার বিভাগীয় পর্যায়ে উত্তীর্ণ হয়।পাশাপাশি তার ঝুলিতে জমা হয় অনেকগুলো ক্রেস্ট,সার্টিফিকেট এবং বিভিন্ন পুরস্কার।
একাডেমিক পড়ালেখার পাশাপাশি এতসব কিভাবে সম্ভব এমন প্রশ্নের উত্তরে স্বভাবসুলভ মুচকি হেসে যেমনটা বলে,
-এই যে ভালো লাগা থেকেই।তবে পড়ালেখা ঠিক রেখে যেকোনো সৃজনশীল কাজের সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখাই শ্রেয়,এতে করে যেমন ভালো লাগবে তেমনি অনেক রকম অভিজ্ঞতা এবং চেনাজানাও সম্ভব হবে।
ও হ্যাঁ,একটা বলাই হয়নি! ২০১৮ বইমেলায় রুমানের প্রথম শিশুতোষ গল্পের বই বের করেছে "পাপড়ি প্রকাশনী"।
শেষতক প্রশ্ন ছিল,কি হতে চাও,
-প্রথমত একজন ভালো মানুষ হতে চাই,আজীবন মা-মাটি ও মানুষের জন্য নিঃস্বার্থ কাজ করতে চাই।
মন্তব্য করতে লগইন করুন অথবা নিবন্ধন করুন