দেশকে এগিয়ে নিতে বরাবরই তরুণদের ভূমিকা ছিল অগ্রগামী। এবার তেমনই একটি সাফল্য যুক্ত হয়েছে তারুণ্যের ঝুলিতে। বুয়েটে অধ্যয়নরত পাঁচ বন্ধুর গড়া দল 'এরফাইন্ডার' এবার ভারতের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি মুম্বাইয়ের বার্ষিক বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক আয়োজন 'টেকফেস্ট' :ইন্টারন্যাশনাল রোবটিকস চ্যালেঞ্জ (আইআরসি) প্রতিযোগিতায় মোট নয়টি দেশের ২৩টি দলকে টপকে জায়গা করে নেয় তৃতীয় স্থানে। প্রতিভাবান এই তরুণদের রোবট তৈরির সাফল্যের গল্পটি নিয়ে লিখেছেন আহসান রনি
ভারতের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি মুম্বাইয়ের বার্ষিক বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক আয়োজন 'টেকফেস্ট' :ইন্টারন্যাশনাল রোবটিকস চ্যালেঞ্জ (আইআরসি) প্রতিযোগিতা। চলতি বছরের আইআরসি গত ৩ থেকে ৫ জানুয়ারি মুম্বাইয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বাংলাদেশ, ভারত, মিশর, ফ্রান্স, নেপাল, রাশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, সুইডেন ও শ্রীলঙ্কার মোট ২৩টি দল অংশ নেন। সেখানে শীর্ষস্থানে থেকে বুয়েটের এরফাইন্ডার মূল পর্বের প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পায়। আইআইসি থেকে বিজয়ী হয়ে তারা আমন্ত্রণ পান আইআইটি মুম্বাইয়ের টেকফেস্টের অন্তর্গত আইআরসি-এর
ইন্টারন্যাশনাল রাউন্ডে। চতুর্থস্থানে থাকা দুটি দল শ্রীলঙ্কার ইউনিভার্সিটি অব মরটুয়া-২ এবং ফ্রান্সের মধ্যকার নক আউট ম্যাচে জেতে মরটুয়া-২ দলটি। ইন্ডিয়ান আইপিএল-এর প্লেঅফের নিয়মানুযায়ী তাদের খেলা পড়ে মরটুয়া-২-এর সাথে। মাত্র ১ সেকেন্ডের জন্য সে ম্যাচে জয়ী হয় তারা, খেলাটা ছিল ফাইনাল খেলা থেকেও উত্তেজনাপূর্ণ। পরবর্তীকালে এরফাইন্ডারের খেলা পড়ে দ্বিতীয় দল শ্রীলংকার এসএলআইটি-এর সাথে। কিছু যান্ত্রিক ত্রুটির জন্য তারা অল্পকিছু সময়ের ব্যবধানে হেরে যান এবং আইআরসি-এর তারা হন সেকেন্ড রানার্সআপ। প্রাপ্তি ছিল প্রাইজমানি এবং সার্টিফিকেট অব এক্সেলেন্স। প্রতিযোগিতায় দলটি তৃতীয় স্থান অধিকার করে। এই অর্জন তাদের অনুপ্রাণিত করে সামনে এগিয়ে যেতে। এরই ধারাবাহিকতায় পাঁচ বন্ধু মিলে তৈরি করে ফেললেন 'এরফাইন্ডার' দলটি। রুয়েটের ইন্টারন্যাশনাল কম্পিটিশন মাইক্রোমাউসে অংশগ্রহণের সময়ই প্রথমবার 'এরফাইন্ডার' নামে অংশ নেন তারা। জার্মান শব্দ এরফাইন্ডারের অর্থ উদ্ভাবক। নামই যারা উদ্ভাবক কাজে তারা তো কিছু করে দেখাবেন এটাই স্বাভাবিক। সে প্রতিযোগিতায় তাদের দল চ্যাম্পিয়ন হয়। সেখান থেকেই বলতে গেলে তাদের মূল কাজের সূচনা। ইমাম, সিয়াম, সাদমান আর অনিককে নিয়ে টিমলিডার তানভীর অংশগ্রহণ করেছেন অনেক প্রতিযোগিতায়। ২০১৩ সালে যখন আইআরসি (ইন্ট্যারন্যাশনাল রোবোটিক চ্যালেঞ্জ)-এর ঘোষণা আসে তখন তারা সবাই মাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথমবর্ষের গণ্ডি পেরিয়েছেন এবং অভিজ্ঞতাও ছিল অনেক কম। সীমিত অভিজ্ঞতা, অর্থ ও সময়ের মাঝেই তাদেরকে প্রস্তুতি নিতে হয়। গতবারের প্রতিযোগিতায় উল্লেখযোগ্য কোনো সফলতা না এলেও ঝুলিতে যোগ হয় অনেক অভিজ্ঞতা। বাবা-মা, ডিপার্টমেন্ট ও হলের বড়ভাইরা, বিশেষ করে বুয়েটের ইইই ডিপার্টমেন্ট তাদেরকে অনেক সাহায্য করেছেন—এরফাইন্ডার সবার কাছে কৃতজ্ঞ। প্রযুক্তিকে কীভাবে দেশের আপামর জনসাধারণের কাজে লাগানো যায় সেটা তাদের ভবিষ্যত্ পরিকল্পনা বলে জানালেন এই তরুণরা। তারা তরুণ প্রজন্মকে এই ধরনের কাজে আসার আহ্বান জানান। তারা চান এই সেক্টরে আরও প্রতিভাবানদের অংশগ্রহণই বিশ্বমঞ্চে দেশের নামকে উজ্জ্বল করার নিশ্চয়তা দেবে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন অথবা নিবন্ধন করুন