নিজের সৌন্দর্য নিয়ে তরুণ-তরুণীদের ভাবনার অন্ত নেই। পাশাপাশি ফিটনেস নিয়েও দুশ্চিন্তায় ভোগেন অনেকেই। তাই একটু ওজন বাড়লেই শুরু হয়ে যায় দৌড়ঝাঁপ। ডায়েট-এক্সারসাইজ নিয়ে এক হুলুস্থূল অবস্থা! এই ঘটনা হয়তো আপনার জন্যও সত্য। কিন্তু ঠিক যতটা চাইছেন ততটা কি হতে পারছেন? অথবা বাড়তি ওজন কমানোর সঠিক পদ্ধতি কি সে খবর কি রাখেন? তাই এবার আপনার বাড়তি ওজন কমানোর কার্যকর কৌশল নিয়ে লিখেছেন রিয়াদ খন্দকার ও ছবি তুলেছেন দীপঙ্কর দীপু
সকালে উঠে কি আপনার ফ্রেশ লাগছে? হঠাত্ করেই মিষ্টি বা কোনো জাঙ্ক ফুড খাওয়ার ইচ্ছে কমে গেছে? এক্সারসাইজ করতে কি বেশ ভালো লাগছে? ত্বকে কি সুন্দর একটা জেল্লা এসেছে? বারবার খিদে পাচ্ছে? মনে বেশ একটা আনন্দের ভাব সবসময় কি আপনাকে ঘিরে থাকে? কোনো কারণ ছাড়াই কি মাঝে মাঝে হেসে ফেলছেন? এতসব প্রশ্নের বেশির ভাগ উত্তরই যদি 'না' হয় তাহলে কিন্তু বলতেই হবে আপনার ডায়েট প্ল্যান খুব একটা কার্যকর হচ্ছে না। বেশ কিছুদিন হলো ডায়েট প্ল্যান ফলো করছেন। ওজনও হয়তো খানিকটা কমেছে। কিন্তু যতটুকু কমার ততটুকু মনে হয় কমছে না। 'বাইরের খাবার বলতে গেলে খাই না, তবুও ওজন বেড়ে যাচ্ছে' বা 'নিয়ম করে জিমে যাই, তাও রোগা হতে পারছি না'—এই ধরনের আক্ষেপ প্রায়ই বন্ধুবান্ধব বা চেনা পরিচিতদের মুখে শোনেন আর ভাবেন আপনারও একই অবস্থা। আসলে আমরা প্রত্যেকে সুস্থ ও সুন্দর থাকতে চাই, আর তার প্রথম শর্ত হচ্ছে নির্মেদ ঝরঝরে চেহারা। তার জন্য স্ট্রিক্ট ডায়েট, নিয়ম মেনে এক্সারসাইজ কোনো কিছু করতেই আমরা পিছপা হই না। এক্সারসাইজ শুধুমাত্র ফ্লেক্সিবিলিটি বাড়াতে সাহায্য করে না, রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে সুস্থ থাকতেও সাহায্য করে। পাশাপাশি মেটাবলিজম ভালো করে অতিরিক্ত মেদ ঝরাতেও সাহায্য করে। তবে ওজন কমানোর জন্য নিজের ইচ্ছেমতো এক্সারসাইজ বা খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করাই যথেষ্ট নয়। জানতে হবে সঠিক প্রক্রিয়া। নিজের শরীরের গঠন এবং প্রয়োজন অনুযায়ী নিতে হবে সঠিক প্ল্যান। দৈনন্দিন কিছু অভ্যাস বদলিয়ে বাড়তি ওজনের ওপর বড় প্রভাব ফেলা যায়। জীবনযাত্রায় পরিবর্তন কথা শুনলেই মনে হয় সামনে পাহাড় সমান কাজ। আমরা অনেকেই মনে করি অতিরিক্ত নিয়মকানুন মেনে চললে জীবন ঠিকভাবে উপভোগ করা যায় না। আসলে সবটাই অভ্যাসের ব্যাপার। ওজন কমানোর মানেই যে হাই ক্যালরি খাবার জীবন থেকে বাদ দিতে হবে বা এক্সারসাইজ করতে করতে সমস্ত সময় কাটিয়ে ফেলতে হবে তার কোনো মানে নেই। তবে ঝরঝরে থাকতে হলে আপনাকে অ্যাক্টিভ থাকতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। পুষ্টিকর খাবার খান, নতুন করে খাদ্যাভ্যাস তৈরি করুন, যাতে আপনার খাদ্যে ক্যালরির পরিমাণ কমে যায়। কিন্তু মনে রাখতে হবে, ক্যালরি কমাতে গিয়ে খাওয়ার রুচি-তৃপ্তি ও খাবার তৈরির সহজ পদ্ধতি কোনোটিই যেন বাদ পড়ে না যায়। সবচেয়ে ভালো পথ হলো, বেশি বেশি করে উদ্ভিজ খাদ্য যেমন ফল, সবজি এবং আঁশজাতীয় খাবার খান। সব সময় সচেষ্টা থাকুন যেন আপনার খাদ্য বৈচিত্র্যময় হয় এবং রুচি ও পুষ্টি অপরিবর্তিত থাকে। নিজেকে সারাদিন ফিট, চনমনে আর শরীরের কলকব্জাগুলোকে সম্পূর্ণ অ্যাক্টিভ রাখতেই এক্সারসাইজ করা জরুরি। অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে কিংবা ওজন কমাতে এক্সারসাইজ অপরিহার্য। আপনার শরীর যে ধরনের এক্সারসাইজ বহন করতে পারে বা তার সহ্য ক্ষমতা যে ধরনের এক্সারসাইজকে ধারণ করতে পারে সে রকম এক্সারসাইজই বেছে নিন। শরীরের চাহিদা অনুযায়ী খান, যখন বেশি অ্যাক্টিভ থাকবেন তখনই বেশি খান। যখন হাতে তেমন কোনো কাজ না থাকে তখন একটু মনযোগ এবং তৃপ্তি নিয়ে খাওয়া উচিত।
ডায়েট টিপস
সব সময় তাজা খাবার খাওয়ার চাষ্টা করুন। ঘরে তৈরি খাবার হলে সবচেয়ে ভালো হয়, কারণ তাতে পুষ্টি ও সুস্বাস্থ্যের নিশ্চয়তা থাকে। খাবার রান্না তিন ঘণ্টার মধ্যে খেতে পারলে সবচেয়ে ভালো।
একসঙ্গে অনেকটা রান্না করে বারবার গরম করে খেলে সেই খাবার পুষ্টিগুণ ধীরে ধীরে কমতে থাকে। সেজন্য একবারে অনেকটা রান্না না করে বারবার কম খাবার তৈরি করাই স্বাস্থ্যকর।
মৌসুমি ফল বা সবজি দৈনন্দিন ডায়েটে রাখুন। গরমকালে আম আর শীতে কমলালেবুই খান, এতে স্বাদ এবং পুষ্টি দুই-ই পাবেন।
সব মিলিয়ে আপনার ওজন কমানোর পদ্ধতিটি হোক সহজ এবং সঠিক। তা না হলে আপনার ডায়েট প্লান থেকে শুরু করে এক্সারসাইজ সবই যাবে বিফলে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন অথবা নিবন্ধন করুন