যাতায়াতে জনদুর্ভোগ নিরসনে প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে স্লুইসগেটসহ দুটি সেতু। এ সেতু দুটি নির্মাণ করলেও সংযোগ রাস্তা করা হয়নি। এর ফলে সেতু ও স্লুইসগেট জনসাধারণের কোনো কাজে লাগছে না। এলাকাবাসী ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা বিলের ফসলি জমির (সীমানা) সরু আইল দিয়েই যাতায়াত করছেন। বন্যার মৌসুমে যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। শুকনো মৌসুমে যাতায়াতে দুর্ভোগ কিছুটা কমে। এ নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা নীরব ভূমিকা পালন করে আসছেন। জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের গাছবয়ড়া গ্রামে ঝিনাই নদীর পাড় ঘেঁষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর সেতু/কালভার্ট কর্মসূচি ২০১৭-১৮ ও জাইকা বেড়িবাঁধ প্রকল্প ২০১৪-১৫ সেতু দুটি নির্মাণ করেছে।
বন্যার কবল থেকে কয়েকটি গ্রামসহ পুরো এলাকার বাসিন্দাদের রক্ষায় ঝিনাই নদীর বেড়িবাঁধে নির্মাণ করা হয় একটি স্লুইসগেট। গ্রাম রক্ষা বাঁধ সড়কে স্লুইসগেট নির্মিত
হলেও বেড়িবাঁধে রাস্তা নেই। বেড়িবাঁধ সংযুক্ত বিলের পশ্চিম পাশে চার গ্রামের হাজার হাজার মানুষের যাতায়াতের কোনো সড়ক না থাকায় একশ মিটার দূরে বিলের মধ্যে নির্মাণ করা হয় আরেকটি সেতু।
সরেজমিন জানা যায়, জাইকা বেড়িবাঁধ প্রকল্প ২০১৪-১৫ সালে স্লুইসগেট ও দুর্যোগ ব্যবস্থপনা অধিদপ্তর সেতু/কালভার্ট কর্মসূচির আওতায় ২০১৭-১৮ শেষ অর্থবছরে সেতু দুটি নির্মাণ করে। সরিষাবাড়ী উপজেলার গাছবয়ড়া গ্রাম এলাকায় এই সেতু দুটি প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়। সেতু দুটির পূর্বপাড় ঘেঁষে পোগলদিঘা ইউনিয়ন পরিষদ হয়ে উপজেলার সংযুক্ত রাস্তাটি বন্যায় ভেঙে যাতায়াতের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে পশ্চিম পাশে কোনো রাস্তা নেই। কয়েক বছর আগে নির্মাণ করা হলেও সংযোগ সড়ক না থাকায় কোনো কাজে লাগছে না সেতু দুটি। বন্যার মৌসুমে ছয় মাস নৌকা দিয়ে আর শুকনো মৌসুমে বছরের পর বছর ধরে হেঁটে বিলের মধ্য দিয়ে যাতায়াত করে আসছে গ্রামবাসীসহ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। অযথা দুটি সেতু মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে গাছবয়ড়া বিলের মাঝে।
গাছবয়ড়া গ্রামের আব্দুস সালাম মিয়া বলেন, পোগলদিঘা ইউনিয়নের গাছবয়ড়া, চর-সরিষাবাড়ী, ঘোড়ামারা, পশ্চিম মানিকপটল, বিন্যাফৈর, বামনজানি ও টাকুরীয়া গ্রামের শত শত ছাত্র-ছাত্রী সরিষাবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করে। এসব শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসীর যাতায়াতে রাস্তা না থাকায় খুব কষ্টের
মধ্যে বিল পাড়ি দিতে হয়। সেতু সংযোগ রাস্তাটি হলে মানুষ এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেত।
পোঘলদিগা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সামস উদ্দিন বলেন, গ্রাম রক্ষা বেড়িবাঁধটি বন্যায় ভেঙে তছনছ হয়ে গেছে। রাস্তার কোনো চিহ্ন নেই। রাস্তাটি জাইকা প্রকল্প নির্মাণ করেছিল। নতুন করে দুটি রাস্তাই নির্মাণ করতে হবে। দুটি সেতুর সঙ্গে রাস্তা সংযোগ হলে এলাকার মানুষের দুর্ভোগ লাঘব হবে।
সরিষাবাড়ী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর জানান, সেতুর সংযোগ রাস্তা নির্মাণে বরাদ্দের প্রস্তাবনা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই সংযোগ রাস্তাটি নির্মাণ করা হবে। ইউএনও শিহাব উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, পোগলদিঘা ইউনিয়নের গাছবয়ড়া এলাকায় নির্মাণ করা দুটি সেতুর সঙ্গে সংযোগ রাস্তা নেই। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন অথবা নিবন্ধন করুন