আমরা জানি বিভিন্ন কারণে, ১৫ থেকে ৩৫ বছর বয়সীদের ওপর মানসিক চাপ সৃষ্টি হয় যা থেকে মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। যার ফলে, পারিবারিক ও সামাজিক সমস্যা সৃষ্টি হয়। এসব বিষয় নিয়ে রোকেয়া হায়দার টেলিফোনে কথা বলেছেন, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের প্রফেসর ডঃ মোহিত কামালের সঙ্গে।
সাইকোথেরাপি বিশেষজ্ঞ ডঃ মোহিত কামাল বললেন, মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে আমাদের অনেক অজ্ঞতা এবং কুসংস্কার আছে। অনেকেই মানসিক সুস্বাস্থ্য না থাকাকে মানসিক রোগ বলে ভাবেন, যা ঠিক নয়।
বাংলাদেশে বিভিন্ন কারণে তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বাংলাদেশের তরুণদের মধ্যে হতাশা বা বিষন্নতাজনিত মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যাই প্রধান।
ঢাকাসহ শহরাঞ্চলে প্রতিযোগিতা অত্যন্ত মারাত্মক। দেখা যাচ্ছে, যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তারা পছন্দের স্কুল/ কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারছে না। এই যে অ্যাকাডেমিক ফেলিওর, তা থেকে হতাশা তৈরি হচ্ছে। শহরাঞ্চলে উচ্চাকাংক্ষাই হতাশার অন্যতম প্রধান কারণ। সেইসঙ্গে যোগ হয়েছে, সম্পর্কজনিত ব্যর্থতা। ছেলে-মেয়েদের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি হচ্ছে, ভেঙ্গে যাচ্ছে। যার ফলে মানসিক চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। কাউকে হয়তো ভালো লাগছে কিন্তু তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। এসবকিছুই সুস্থ মানসিক স্বাস্থ্যের অন্তরায়।
গ্রামের চিত্র ভিন্ন। সেখানে মানসিক স্বাস্থ্যের বিকাশে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে, বেকারত্ব, অশিক্ষা। সেখানে মেয়েদের কমবয়সে বিয়ে হচ্ছে, যা মেয়েদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যে ভালো হতে পারে না।
মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার ধরণে নারী ও পুরুষদের মধ্যে পার্থক্য আছে কিনা, এই প্রশ্নের জবাবে ডঃ মোহিত কামাল বললেন, অনেকেই হতাশায় ভুগছে, বিষন্নতায় ভুগছে। কিন্তু মেয়েরা বিষন্নতায় ভুগলে, আত্মহত্যা প্রবণ হয়ে পড়ে। আর ছেলেরা ঝুঁকে পড়ে মাদকের দিকে।
তিনি বলছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরিপে দেখা গেছে বাংলাদেশে ১৮ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে ১৮.৫ শতাংশের মানসিক সমস্যা রয়েছে আর ১৮’র ওপরে যাদের বয়স, তাদের মধ্যে মানসিক সমস্যায় ভুগছে ১৬.১ শতাংশ।
তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যের সুরক্ষার জন্যে, ডঃ কামাল, ঘরের পরিবেশ সুন্দর করা, মায়ামমতা সমৃদ্ধ পারিবারিক আবহ তৈরি করার ওপর জোর দিলেন। তিনি বললেন, সন্তান যাতে হতাশার মোকাবিলার শক্তি নিয়ে, আত্মবিশ্বাস নিয়ে বেড়ে উঠতে পারে সেজন্যে বাবা-মার নজর দিতে হবে। source- Voice of America
মন্তব্য করতে লগইন করুন অথবা নিবন্ধন করুন