পানির ফোয়ারার মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উদ্ভাবন করে এলাকায় তাক লাগিয়ে দিয়েছেন মাদারীপুরের কালকিনির দুই শিক্ষার্থী। উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল রমজানপুরে অবস্থিত ডক্টর আবদুস সোবহান গোলাপ পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের ওই দুই শিক্ষার্থীরা হলেন- নিউটন হাওলাদার ও সাকিব ইসলাম সবুজ। দুজনই প্রতিষ্ঠানটির ইলেকট্রনিকস বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র।
পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের মাঠের সামনে পানির ফোয়ারাটি তৈরি করেছেন তারা। সরকারের সহায়তা পেলে এ ফোয়ারাকে আরও বৃহৎ আকারে তৈরি করে গণভবনের সামনে স্থাপন করতে চান তারা।
জানা যায়, ৬ মাস আগে ব্যক্তিগত কাজে ঢাকায় যান নিউটন হাওলাদার ও সাকিব ইসলাম সবুজ। সন্ধ্যার পর প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনের সামনে দিয়ে আসার সময় দৃষ্টিনন্দিত ফোয়ারা দেখে মুগ্ধ হন তারা।
এরপরে বাড়িতে ফিরে দুজনই শুধু ফোরায়া নয়, তার মধ্যে কীভাবে জাতীয় পতাকা প্রদর্শন করা যায়? এ নিয়ে ভাবতে থাকেন। গত তিন মাস আগ থেকে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে ইলেকট্রনিকস পাম্প মোটরের সাহায্যে প্রায় এক লাখ টাকা ব্যয়ে চার ফিট দৈর্ঘ্য জাতীয় পতাকার ফোয়ারা আবিষ্কার করেন তারা।
জাতীয় পতাকাসংবলিত পানির ফোয়ারা দেখার জন্য বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ছাত্রছাত্রীসহ নানা পেশার মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন।
পানি ফোয়ারায় জাতীয় পতাকা অবিষ্কারক নিউটন হাওলাদার বলেন, আমরা স্বাধীন দেশে বাস করি। দেশকে ভালোবেসে কলেজের অধ্যক্ষসহ অন্যান্য শিক্ষক ও সব শিক্ষার্থীর সহযোগিতায় আমরা এ পানির ফোয়ারাটি তৈরি করেছি। লাখও শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা যে পতাকা পেয়েছি তা পানির ফোয়ারার মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছি। আমরা ভবিষ্যতে আরও বড় বড় এ ধরনের ফোয়ারা তৈরি করতে চাই। কিন্তু ফোয়ারা তৈরি অনেক ব্যয়বহুল। তাছাড়া আমরা ছাত্র মানুষ ফোয়ারা তৈরির জন্য লাখ লাখ টাকা কোথায় পাব?
তিনি বলেন, আমাদেরকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করা হলে বড় ফোয়ারা তৈরি করতে পারব। সবচেয়ে বড় ফোয়ারাটি প্রধানমন্ত্রীকে উপহার হিসেবে দিতে চাই। বড় ফোয়ারাগুলো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে, গণভবনের সামনেসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বসানো যেতে পারে। এর ফলে আমাদের দেশের গৌরব আরও বৃদ্ধি পাবে।
প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, নিউটন ও সবুজ পানির ফোয়ারার মাধ্যমে জাতীয় পতাকা তৈরি করে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছেন। আমরা সহপাঠীরা এই আবিষ্কারে গর্বিত। জাতীয় পতাকা আবিষ্কারের ফলে আমাদের কলেজের সুনাম দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়বে এই প্রত্যাশা করি। ডক্টর আবদুস সোবহান গেলাপ পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের অধ্যক্ষ সালাউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, আমাদের কলেজের কৃতী এই দুই শিক্ষার্থীদের পানির ফোয়ারার মাধ্যমে জাতীয় পতাকা আবিষ্কারে আমরা সবাই গর্বিত। আমার মনে হয়, এ ধরনের আবিষ্কার বাংলাদেশ তথা বিশ্বে সর্বপ্রথম। আমি সরকারের নেতৃস্থানীয় সবার প্রতি আহ্বান জানাব, আমাদের এই প্রতিষ্ঠানে সরকারি সহযোগিতা বাড়িয়ে দিলে নতুন নতুন আবিষ্কারে ছাত্ররা উৎসাহিত হবে। যা দেশ ও জাতির জন্য সম্মান বয়ে আনবে। সূত্র: দৈনিক যুগান্তর
মন্তব্য করতে লগইন করুন অথবা নিবন্ধন করুন