হুমায়ূন আহমেদ। বাংলা সাহিত্যের উজ্জ্বল নক্ষত্র। তিনি ছিলেন একজন বাংলাদেশি ঔপন্যাসিক, ছোট গল্পকার, নাট্যকার এবং গীতিকার, চিত্রনাট্যকার ও চলচ্চিত্র নির্মাতা। তিনি বিংশ শতাব্দীর জনপ্রিয় বাঙালি কথা সাহিত্যিকদের মধ্যে অন্যতম।
তাকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী শ্রেষ্ঠ লেখক হিসেবেও গণ্য করা হয়। বাংলা কথাসাহিত্যে তিনি সংলাপ প্রধান নতুন শৈলীর জনক। তার বেশ কিছু গ্রন্থ পৃথিবীর নানা ভাষায় অনূদিত হয়েছে, বেশ কিছু গ্রন্থ স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্তও হয়েছে।
সেই প্রবাদ পুরুষ হুমায়ূন আহমেদের উপর সম্প্রতি পিএইচডি সম্পন্ন করেছেন শেরে বাংলা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্টার ড. সানজিদা ইসলাম। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে করা তার পিএইডি’র বিষয় ছিল ‘হুমায়ূন আহমেদের কথাসাহিত্যে স্বাদেশিক চেতনা’। হুমায়ূন আহমেদ তাঁর স্বাদেশিক চেতনানির্ভর উপন্যাসে তিনি মুক্তিযুদ্ধকালীন এবং তৎপরবর্তী বাস্তবতার চিত্র তুলে ধরেছেন সুনিপুনভাবে।
ড. সানজিদা ইসলাম বলেন, ‘বাংলা সাহিত্যে তো বটেই, বাংলা সংস্কৃতিতেও হুমায়ূন আহমেদ বিরাট একটি জায়গা জুড়ে আছেন। তার মতো মানুষের উপর একটি ডিগ্রি নিতে পারাকে আমি বিশেষ অর্জন হিসেবে দেখছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের বৃহৎ ক্যানভাসকে তিনি মধ্যবিত্তের জীবন বাস্তবতার আলোকে তুলে ধরেছেন শ্যামল ছায়া (১৯৭৪), নির্বাসন (১৯৭৪), সৌরভ (১৯৭৮), ১৯৭১ (১৯৮৬), আগুনের পরশমণি (১৯৮৬), সূর্যের দিন (১৯৮৬), অনিল বাগচীর একদিন (১৯৯২), জোছনা ও জননীর গল্প (২০০৪), দেয়াল (২০১২) প্রভৃতি উপন্যাসে। তার ‘জোছনা ও জননীর’ গল্প উপন্যাসে যে মহাকাব্যিক পটভূমিকে তুলে ধরেছেন তা আমাদের চিরচেনা বাঙালি জীবনের নানা প্রতিচ্ছিবির পাশাপাশি ব্যক্তি হুমায়ূন আহমেদের যুদ্ধকালীন নানা অভিজ্ঞতার কথাও রূপক, প্রতীক, জীবনবাস্তবতা প্রভৃতি ব্যবহারের মাধ্যমে তিনি উপন্যাসগুলোতে মধ্যবিত্ত বাঙালি জীবনের নিত্যদিনের অতি পরিচিত রূপকেই তুলে ধরেছেন।’
মন্তব্য করতে লগইন করুন অথবা নিবন্ধন করুন