করোনাকালে বাংলাদেশসহ সারা পৃথিবীতেই সামাজিক উদ্যোগের ক্ষেত্রে এক নতুন ধারা সূচিত হয়েছে। বিশেষত তরুণরা এ সময় এগিয়ে এসেছেন নানামুখী সৃজনশীল কর্মে। তেমনি উদ্যমী তিন তরুণ রিয়াদ, সিজার ও সাইফ। রিয়াদ পড়াশোনা করছেন আহ্ছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে, সিজার পড়ছেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্সে আর সাইফ ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনে। করোনাকালীন পরিস্থিতি বিবেচনা করে তারা মাগুরায় বাণিজ্যিকভাবে 'অর্পণ' নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন হোম ডেলিভারি সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে। বাংলাদেশে প্রথম করোনা শনাক্ত হওয়ার পর এর সংক্রমণ রোধে দীর্ঘ লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। উদ্ভূত এই পরিস্থিতিতে ওষুধের দোকান ছাড়া বন্ধ ছিল অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান। করোনা সংক্রমণের ভয়ে যখন মানুষের বাড়িতে সাহায্যকারীও যাচ্ছিল না, সে সময় সকাল ও বিকেলের নাশতার নানা আইটেম, কাপড়, বই, ওষুধ, সবজি, ফলমূল, সংবাদপত্রসহ গৃহস্থালির নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ভোক্তার বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার মতো কাজ শুরু করেন তারা।চাহিদা অনুযায়ী ভোক্তা অর্ডার দিচ্ছেন ফেসবুকে কিংবা ফোনে। আর পণ্য পৌঁছে যাচ্ছে নির্দিষ্ট গন্তব্যে। সামান্য কিছু সার্ভিস চার্জের বিনিময়ে ভোক্তা ঘরে বসেই বুঝে নিচ্ছেন অর্ডার করা পণ্য এবং পণ্য হাতে পেয়ে তবেই পরিশোধ করছেন মূল্য। এতে করে একদিকে যেমন ক্রেতার করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি কমছে এবং পাশাপাশি কমছে কষ্ট, অন্যদিকে উদ্যোক্তারা লেখাপড়ার পাশাপাশি নিজেদের জন্য যেমন স্বাধীন কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে পেরেছেন, তেমনি অসংখ্য তরুণের জন্যও তৈরি হয়েছে নিরাপদ উপার্জন ক্ষেত্র- এমনটাই মনে করেন অর্পণের তিন প্রতিষ্ঠাতা।
তারা বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে অনেকের আয়- রোজগারের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। তবে হোম ডেলিভারি সেবার মতো কিছু ব্যবসার ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার উন্মোচিত হয়েছে। ভোক্তার চাহিদা পূরণে ডেলিভারি কর্মী নিয়োগ করোনার সময়ে কর্মহীন মানুষের উপার্জনের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা সূচিত করেছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।
উদ্যমী তিন তরুণ মনে করেন, করোনা-পরবর্তী বিশ্বব্যাপী পেশায় বেশ কিছু পরিবর্তন আসবে। সেই পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারলে পেশা জীবনে কোনো ঝুঁকিতে পড়তে হবে না। ভবিষ্যতের জন্য নির্দিষ্ট কোনো পেশায় নিজেকে আটকে না রেখে অনিশ্চয়তাকে বাস্তবতা ভেবে সেভাবেই নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। এ ব্যাপারটা আমরা অনুধাবন করে বাস্তবিক অর্থে প্রয়োগ শুরু করেছি, যেন উদ্দেশ্যহীনতায় আমাদের মধ্যে হতাশা তৈরি না হয়।
সর্বোপরি তারা মনে করেন, করোনা-পরবর্তীও অর্পণের আবেদন সমানভাবে থাকবে। কারণ, মানুষের জীবনব্যবস্থা প্রতিনিয়ত উন্নত থেকে উন্নততর হচ্ছে। সেই চেষ্টায় মানুষের কাজের চাপ কমাতে এবং প্রয়োজনের সময় সেবাগ্রহীতাকে সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করতে অর্পণের এই হোম ডেলিভারি সার্ভিসটি অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। া
মন্তব্য করতে লগইন করুন অথবা নিবন্ধন করুন